রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: ত্রিপক্ষীয় কমিটি গঠন চীনের জন্য বড় পরীক্ষা

বাংলা ট্রিবিউন :

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে এশিয়ার সবচেয়ে বড় শক্তি চীনের দারস্থ হয়েছে বাংলাদেশ। এ সমস্যার সমাধান নিয়ে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে নীতিগত মিল না থাকলেও সরকারের অনুরোধে সাড়া দিয়েছে বেইজিং এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে।

এর ধারাবাহিকতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় কমিটি গঠনের জন্য গত মাসে প্রস্তাব দিয়েছিল বেইজিং। তবে এখন পর্যন্ত ওই কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি।

একাধিক কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, মিয়ানমারের বিরোধীতার কারণে ওই কমিটি গঠন করা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন,‘চীন আমাদের একাধিকবার অনুরোধ করেছিল রোহিঙ্গা বিষয়টিকে দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধান করার জন্য এবং এটিকে আন্তর্জাতিকীকরণ না করার জন্য। তবে সে অনুরোধ রাখা সম্ভব হয়নি।’ এরপরও বাংলাদেশের অনুরোধে সাড়া দিয়েছে চীন এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে, তবে এখন মিয়ানমার এর বিরোধীতা করছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুনশি ফায়েজ আহমেদ বলেন, ‘চীন এশিয়ার সবচেয়ে বড় শক্তি এবং বেইজিংয়ের সঙ্গে সীমান্ত আছে মিয়ানমারের।’ তিনি বলেন, ‘চীনের প্রস্তাব যদি মিয়ানমার না মানে, তবে মুখ রক্ষার জন্য বেইজিংকে পদক্ষেপ নিতে হবে।’

চীন প্রথম থেকে রোহিঙ্গা সমস্যার সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং এখন আরও বেশি সম্পৃক্ত হয়েছে। এ অবস্থায় মিয়ানমারকে রাজি করানোর মতো অস্ত্র বেইজিংয়ের রয়েছে বলে তিনি জানান।

মুনশি ফায়েজ আহমেদ বলেন, ‘আমি জানি না চীন কী করবে, কিন্তু কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক উভয় ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব চীনের পক্ষে।’

তিনি বলেন, ‘চীন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের পক্ষে অবস্থান নাও নিতে পারে বা অন্যভাবে চাপ দিতে পারে।’

মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক সামরিক অ্যাটাশে শহীদুল হক বলেন, ‘চীন সবসময় মিয়ানমারকে পৃষ্টপোষকতা করেছে এবং তাদের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত মজবুত।’

মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি পশ্চিমা দুনিয়ার কাছে অত্যন্ত সমাদৃত এবং তিনি ক্ষমতায় আসার পর চীনের সঙ্গে কয়েক বিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প আটকে দিয়েছিলেন। কিন্তু রোহিঙ্গা সমস্যা শুরু হওয়ার পর ওই প্রকল্পে তারা আবারও রাজি হয় বলে তিনি জানান।

শহীদুল হক বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যায় চীনের সহায়তা মিয়ানমার পাচ্ছে এবং তার জন্য অনেক মূল্যও দিতে হচ্ছে।’

এই অবস্থায় চীনের প্রস্তাবে মিয়ানমার রাজি না হলে সম্মান রক্ষার্থে এশিয়ার সবচেয়ে বড় শক্তিকে পদক্ষেপ নিতে হবে মনে করেন সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তা।